রোজার পর এবার ঈদ বাজারে পণ্যের দামেও স্বস্তি

হ-বাংলা নিউজ: এবার রোজার পর ঈদ বাজারে পণ্যের দাম কিছুটা কমে গেছে, যা গত বছরের তুলনায় ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির খবর। গত বছরের রোজার ঈদের তুলনায় পোলাও চাল প্রতি কেজি ৪০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে, কেজিপ্রতি চিনি ২০ টাকা কমেছে এবং সেমাইও কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দুধ ও ঘি আগের দামেই রয়েছে। এলাচ বাদে অন্যান্য মসলা পণ্যের দামও স্থিতিশীল রয়েছে।

তবে এই পরিস্থিতির মাঝেও কিছুটা শঙ্কা রয়ে গেছে ভোক্তাদের মধ্যে। তাদের মতে, এক মাস রোজা পালন করার পর ঈদের সময় সব শ্রেণির মানুষ আনন্দে মেতে ওঠে, নতুন পোশাকের সঙ্গে ঘরে ভালো খাবারের আয়োজন করা হয়। এতে বাজারে চাহিদা বাড়ে, এবং এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করার চেষ্টা করে। তারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়, তবে এবারের রোজায় পণ্যের দাম কম ছিল, তাই ঈদে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে কঠোর তদারকি প্রয়োজন।

বুধবার রাজধানীর জিনজিরা বাজার, নয়াবাজার এবং রায়সাহেব বাজারে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের রোজার ঈদের আগে ২০০ গ্রামের চিকন সেমাই বিক্রি হয়েছিল ৪৫-৫০ টাকায়, যা এবার ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, ১ কেজি খোলা চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়, যা গত বছর ১৫০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, যা আগে ৫০-৬০ টাকায় ছিল। পোলাও চাল ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৮-১২০ টাকায়, যা গত বছর ১৪০ টাকায় ছিল।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, মিল্কভিটা ঘি প্রতি কেজি ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগেও ৬০ টাকা কম ছিল। এছাড়া, প্রাণ ঘি ১৪০০ টাকা ও আড়ং ব্র্যান্ডের ঘি ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিপ্লোমা দুধ ৮৯০ টাকা, ডানো ও মার্কস দুধ ৮৮০ ও ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিশমিশ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ৬৮০-৭০০ টাকায় ছিল। দেশি পেঁয়াজ ৩০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ৭০ টাকায় ছিল। দেশি রসুন ৮০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

এছাড়া, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৭৫০-৭৮০ টাকায় ছিল এবং ব্রয়লার মুরগি ২০০-২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. সাঈদ বলেন, “এবার বাজারে রোজার আগে থেকেই কিছুটা স্বস্তি আছে। পণ্যের দাম গত রোজার তুলনায় কম ছিল। এখন পর্যন্ত ঈদে পণ্যের দামেও কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে। তবে মাংসের দাম বেড়েছে। ঈদ এলেই কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়, তাই এবার তদারকি জোরদার করতে হবে।”

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, “সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এবারের রোজায় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ছিল। ঈদেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কঠোর বাজার মনিটরিং প্রয়োজন।”

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোজার সময় সার্বিকভাবে বাজার তদারকি করা হয়েছে এবং অনিয়ম 발견 হলে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। ঈদে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে তদারকি আরও জোরদার করা হয়েছে, ফলে আশা করা হচ্ছে এবার ঈদে বাজারে স্বস্তি থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *