গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির বিরোধ, স্বার্থান্বেষা এবং মতান্ধতার সংঘাত সরকারের জন্য সমস্যা তৈরি করছে, মন্তব্য মাহফুজ আলমের

হ-বাংলা নিউজ: গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির বিরোধ, স্বার্থান্বেষা এবং মতান্ধতার সংঘাত, অন্যদিকে গণ-অভ্যুত্থানের বিরোধী শক্তিগুলোর ঐক্যবদ্ধ উত্থান—এই দুটি কারণেই সরকার বর্তমানে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

মঙ্গলবার ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড আইডি থেকে এই মন্তব্য করেন মাহফুজ আলম।

তার পোস্টে তিনি বলেন, “গতকাল মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একটি পর্যালোচনা সভায় নারী ও শিশুর প্রতি নিপীড়ন এবং সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ এবং সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলাম যে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অপরাধীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং বিচার দ্রুত ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সরকার তৎপর।”

তথ্য উপদেষ্টা আরও জানান, ছাত্র-যুবকদের জন্য লক্ষাধিক চাকরির ব্যবস্থা এবং তরুণদের জন্য জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়ে গতকালের আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাবে এবং সে লক্ষ্যে সমন্বিত কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

সরকারকে কীভাবে বেকায়দায় ফেলছে, এ প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম বলেন, “দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং বিচার, প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী করা, শহিদ এবং আহতদের জন্য ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকার ইতিমধ্যে সক্রিয় এবং সফল। কিন্তু সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, ব্যবসায়ী শ্রেণি এবং মিডিয়ার মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির বিরোধ, স্বার্থান্বেষা এবং মতান্ধতা—এই সবকিছু মিলিয়ে সরকারের উপর চাপ তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে, গণ-অভ্যুত্থানের বিরোধী শক্তিগুলোর ঐক্যবদ্ধ উত্থান সরকারকে বেকায়দায় ফেলছে।”

তিনি আরও বলেন, “সরকার একটি শক্তিশালী দেশি-বিদেশি জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, যাদের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান পরাজিত হয়েছে। তবে, স্বার্থান্বেষী মহল জনগণের মধ্যে ঐক্যকে ভেঙে দেওয়ার জন্য তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল এবং অভ্যুত্থানের শক্তিগুলিকে মুখোমুখি না করাই আমাদের জন্য লাভজনক হবে।”

মাহফুজ আলম বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশে এখন যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এটি অন্য জায়গা থেকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই যুদ্ধের প্রতি সপ্তাহ এবং দিনের কর্মসূচি একটি কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটর করা হচ্ছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে।”

ভিনদেশ থেকে দ্রুততার সঙ্গে সরকার পরিবর্তনের প্রেসক্রিপশন আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যা ও লুটপাটের বিচার, প্রতিষ্ঠানসমূহের পুনরুজ্জীবন এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তর—এসব আমাদের লক্ষ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। তবে, বর্তমান সরকারের আমলে এই দেশকে গড়ে তোলার জন্য সুযোগ এবং সক্ষমতা তৈরি হয়েছে, যার ফলে ভিনদেশ থেকে সরকার পরিবর্তনের তাগিদ দ্রুত আসছে। তবে, নির্বাচন যথাসময়ে হবে এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে রাষ্ট্র সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি ঘটবে এবং খুনি, ধর্ষক ও লুটেরাদের বিচার হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *