হ-বাংলা নিউজ: ভারতের ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের মধ্যে বনিবনা চলছে না। ফারাক্কা বাঁধের কারণে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের পানি সংকট হচ্ছে, আবার ভরা মৌসুমে বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে আকস্মিক বন্যা ও ব্যাপক ক্ষতির সৃষ্টি হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে সম্প্রতি উভয়দেশের মধ্যে দুই দিনব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, তবে শেষ পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
বৈঠক চলাকালীন ভারত ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা ফারাক্কায় গঙ্গার পানি পরিমাপ করেন। প্রথম দিনে গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা সফলভাবে চলে, এবং প্রতিনিধিরা বৈঠকের মিনিটসে সই করেন। তবে দ্বিতীয় দিনে সীমান্তের নদী নিয়ে আলোচনার সময় কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি, ফলে দ্বিতীয় দিনের বৈঠকের পর মিনিটসে সই হয়নি।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেছেন, “পরিকল্পনা অনুযায়ী বৈঠক হয়েছে, তবে এর চেয়ে বেশি কিছু এখন বলা সম্ভব নয়।” অন্যদিকে ভারতের পক্ষ থেকে কেউ এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি এবং বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনও হয়নি।
দ্বিতীয় দিনের বৈঠকের সমস্যা
শুক্রবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে মূলত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি, বন্যা রিপোর্ট এবং সীমান্ত নদীগুলির বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারায় বৈঠক শেষে মিনিটসে সই করা হয়নি।
গত বছরের বন্যায় একাধিক সীমান্ত নদীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙে পড়েছে। সীমান্ত নদী হওয়ায়, বাঁধ মেরামতের জন্য দুই দেশের সম্মতি প্রয়োজন। ৭ মার্চের বৈঠকে বাংলাদেশ এসব নদী মেরামতের পরিকল্পনা করেছিল, তবে ভারত এখনও তার সম্মতি দেয়নি এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চায়।
তথ্য ভাগাভাগি এবং সাময়িক সমঝোতা
তথ্য ভাগাভাগির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং ভারত তাতে সম্মতি জানালেও, এটি মিনিটসের খাতায় তোলার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যার ফলে সই হয়নি।
ফারাক্কা সফর
গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রতিনিধিরা প্রতি বছর ফারাক্কায় গিয়ে পানি ভাগাভাগির পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। এবছর ৪ মার্চ ফারাক্কায় পানি পরিমাপের পর বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা সন্তুষ্টির কথা জানান। তারা আরও জানান, এবছর পানি কম থাকার কারণে দুই দেশই কম পানি পাচ্ছে।
এরপর, ৬ মার্চ গঙ্গা পানি বণ্টন, গঙ্গায় কম পানি এবং নদীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে ভারত ও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব, শরদ চন্দ্র এবং মোহাম্মদ আবুল হোসেন, আলোচনার সারাংশে সই করেন।
সূত্র জানাচ্ছে, সাময়িক জটিলতা কেটে গেলে ভবিষ্যতে সমঝোতায় সই হতে পারে।
