৪–২–৩–১ ছকে রিচার্লিসনকে সামনে রেখে আক্রমণ সাজিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ তিতে। নেইমার ও দুই উইংয়ে ভিনিসিয়ুস এবং রাফিনিয়া দৌড়ানোর জায়গা পেয়েছেন শুরু থেকেই। পাথুরে নদীতে শত বাধার মধ্যেও জলের স্রোতোধারা যেভাবে সবকিছু ডিঙিয়ে আপন গতিতে এগিয়ে চলে, নেইমার ও তাঁর সতীর্থরা ঠিক এমন ফুটবলই খেলেছেন। তাতে ৭ মিনিটেই এসেছে প্রথম গোল।
ডান প্রান্ত দিয়ে রাফিনিয়া কোরিয়ান বক্সে ঢুকে ক্রস করেন। নেইমার বলে পা ছোঁয়ানোর চেষ্টা করেও পারেননি। পেছনেই একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভিনিসিয়ুস। বলটা পেয়েই ভিনি যেন একটু বুঝে নিলেন, ঠিক কোন দিক দিয়ে মারলে কোনো বাধা ছাড়াই জালে যাবে।
ম্যাচটা প্রায় আধঘণ্টার মধ্যেই মোটামুটি শেষ হয়ে যাবে, সেটি তখনো বোঝা যায়নি। আঁচ পাওয়া গেল ৫ মিনিট পর। কোরিয়ার বক্সে রিচার্লিসন ফাউলের শিকার হওয়ায় পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। স্পটকিক থেকে নেইমারের নেওয়া পেনাল্টি শট খুদে ফুটবলারদের জন্য রেফারেন্স পয়েন্ট। শুধু শরীরের ডজে এত আস্তে শট নিয়েও লক্ষ্যভেদ করা সম্ভব!
গ্যালারির দর্শক যখন এমন ভাবনায় পুলকিত, স্কোরবোর্ডে তখন ব্রাজিল ২–০ গোলে এগিয়ে। কোরিয়ান খেলোয়াড়দের কাঁধ ঝুলে পড়তে শুরু করেছে। সেই সুযোগে ২৯ মিনিটে দেখা গেল ম্যাচের সবচেয়ে সুন্দর গোল।
কোরিয়ান বক্সের মাথায় বল নিয়ে গারিঞ্চার মতো কিছুক্ষণ ‘জাগলিং’ করে মারকিনিওসকে পাস দেন রিচার্লিসন। ডিফেন্ডারদের মনোযোগ নিজের ওপর থেকে সরাতে সেটি রিচার্লিসনের কৌশল ছিল, তা বোঝা গেল পরের দুটি পাসে।
মারকিনিওস থিয়াগো সিলভাকে পাস দেওয়ার ফাঁকে রিচার্লিসন পাকা ৯ নম্বরের মতো রক্ষণ ভেঙে দৌড় শুরু করেছেন, আর থিয়াগো সিলভাও চোস্ত মিডফিল্ডারের মতো বলটা তাঁর দৌড়ের পথে বাড়িয়ে দেন। বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে রিচার্লিসনের করা গোলটি ‘ফেনোমেনন’কে মনে করিয়ে দেয়। ধারাভাষ্যকারের অবশ্য সেসব মনে করার সময় কোথায়! তিনি বলেছেন আসল কথাটা, ‘প্রবাবলি গেম ওভার!’
