যারা রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাদের হত্যার বিচার হচ্ছে না”

হ-বাংলা নিউজ:যারা রক্তের বিনিময়ে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাদের হত্যার বিচার আজও হয়নি। দেশে নির্বাচন দেওয়ার আগে গণহত্যার বিচার করা উচিত। বিশেষত জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া গণহত্যার দ্রুত বিচার করতে হবে।

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘জুলাই ২৪ শহিদ পরিবার সোসাইটি’ নামে একটি নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের শহিদ পরিবারের সদস্যরা এসব দাবি জানান। নবগঠিত এই সংগঠনের তিনজন উপদেষ্টা নিয়ে ৩০ সদস্যবিশিষ্ট একটি নির্বাহী পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শহিদ পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, একদল রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে, আরেক দল নির্বাচন চাচ্ছে। তারা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সরকার, কিন্তু শহিদ পরিবারের কষ্ট তারা বুঝতে পারছে না।” এছাড়াও তারা জানান, হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ ও হেলমেট বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই এখনও গ্রেফতার হয়নি। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত মো. সিয়ামের ভাই মো. রাশেদ বলেন, “এই সরকারের কাছে আমরা বেশি কিছু চাই না, আমাদের ভাইদের হত্যার বিচার চাই। দেশের কোনো নির্বাচন দেওয়ার আগে আমাদের শহিদের বিচার করতে হবে।”

আশুলিয়ায় পুলিশের আগুনে নিহত সাজ্জাত হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম কান্না করে বলেন, “পুলিশ আমার ছেলেকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাত মাস হয়ে গেলেও আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার পাচ্ছি না। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের অনেকেই এখনও বাইরে রয়েছে। কান্না করতে করতে এখন আমার চোখের জল শুকিয়ে গেছে, তবুও ছেলের হত্যার বিচার পাচ্ছি না।”

আরেক ভুক্তভোগী নাবিল হোসেন জানান, ১৮ জুলাই তার ভাই সোহেল রানা স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলন করছিলেন। পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে এবং বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে। আজও তিনি ভাইয়ের কবর শনাক্ত করতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, “আর কোনো আশ্বাস নয়; রায়েরবাজারে যে ১১৪ জনকে বেওয়ারিশ হিসেবে কবর দেওয়া হয়েছে, তাদের শনাক্ত করতে হবে। যারা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের খুঁজে বের করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টের শহিদদের শতাধিক স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *