হ-বাংলা নিউজ: দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একের পর এক বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষভাবে আলোচিত একটি দুর্নীতির মামলার আসামি হয়েও উপসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়ে অবাক করেছে। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা থেকে প্রেষণে আসা অন্তত অর্ধশত কর্মকর্তাও এখনো দুদকে বহাল তবিয়তে আছেন। একাধিক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের আমলে প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের বহাল রাখা এবং এক ক্যাডার থেকে অন্য ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া দুদককে ক্রমেই দুর্বল করে তুলছে। এই ধরনের নিয়োগ এবং প্রেষণ চলতে থাকলে কমিশন যে কোনো ধরনের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, পাশাপাশি সংস্কার কমিশনের সুপারিশও কার্যকর করা সম্ভব হবে না।
দুদকের বিধি অনুযায়ী, প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ তিন বছর ওই পদে থাকতে পারেন, এরপর তাদের নিজ সংস্থায় ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু অনেক কর্মকর্তা এই বিধির বাইরে গিয়ে বছরের পর বছর দুদকে কর্মরত থাকেন এবং পদোন্নতি পান। এমনকি একাধিক কর্মকর্তা আট বছর ধরে দুদকে কাজ করছেন, যা সম্পূর্ণভাবে বিধির লঙ্ঘন।
জানতে চাইলে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আগে এই ধরনের নিয়োগ স্থগিত করা উচিত। এমন পদক্ষেপ দুদককে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে এবং সংস্কার কার্যক্রমের সফলতা ক্ষুণ্ণ করবে।’
সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর সরকারি অফিসে থাকা বিতর্কিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেষণে আসা অধিকাংশ কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। এসব কর্মকর্তা নানা কৌশলে পতিত সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আমলাদের দুর্নীতির অভিযোগের ফাইল চাপা দিয়ে রেখেছেন।
মনে করা হচ্ছে, দুদকের ক্ষমতায় থাকা কর্মকর্তাদের অনেকেই নিজেদের অপরাধ এবং দুর্নীতির স্বার্থে ফাইলের নিষ্পত্তি করেন। এমনকি অনেক তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং অনুসন্ধানকারীরা চাপের মুখে অপরাধী কর্মকর্তাদের জন্য ফাইল বন্ধ করেন।
এদিকে, নতুন কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পরও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রেষণে নিয়োগ দেওয়ার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত ৬ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাধিক প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে আবু হেনা মোর্শেদ জামান, ঈশিতা রনি, একেএম সাইফুল আলম, মোহাম্মদ ইকবাল বাহার, মো. আমিন আল পারভেজ ও মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ রয়েছেন।
দুদকের পরিচালক আব্দুল মাজেদ, মো. আব্দুল আওয়াল, উত্তম কুমার মণ্ডল, ফজলুল জাহেদ পাভেল এবং উপপরিচালক সাবরিনা নার্গিস, একেএম মাহবুবুর রহমান সহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার তিন বছরের প্রেষণ মেয়াদ শেষ হলেও তারা দীর্ঘকাল ধরে পদে বহাল আছেন।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপপরিচালক পর্যায়ে প্রেষণে নিয়োগের হার সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ হওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবে এর বিপরীত ঘটছে।
এ প্রসঙ্গে, দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (আইন ও প্রসিকিউশন) মইদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা দুদকে বছরের পর বছর কাজ করছেন, অথচ তাদের কোনো তদন্ত অভিজ্ঞতা নেই। বিধি অনুযায়ী প্রেষণের মেয়াদ তিন বছর হলেও অনেকেই সাত-আট বছর কাজ করছেন, যা সম্পূর্ণভাবে আইনের লঙ্ঘন।’
এদিকে, আমিন আল পারভেজ নামক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তথ্যে জানা যায়, তিনি মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে আসামি হিসেবে উল্লেখ হয়েছিলেন, তবে পরে তাকে দুদকের পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে দেখা যাচ্ছে, এই নিয়োগের মাধ্যমে তিনি নিজের বিরুদ্ধে থাকা মামলাটি চাপা দিতে চাইছেন।
পারভেজ এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই। আমি কোনো তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলাম, তবে তদন্ত প্রতিবেদনে আমাকে আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কিংবা প্রমাণ নেই।’
এ ধরনের নিয়োগ এবং প্রেষণ অব্যাহত থাকলে দুদকের কার্যক্রম এবং উদ্দেশ্য একেবারে অকার্যকর হয়ে পড়বে, যা দেশের দুর্নীতি দমনে বড় একটি বাধা হিসেবে দাঁড়াবে।
Tx
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একের পর এক বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষভাবে আলোচিত একটি দুর্নীতির মামলার আসামি হয়েও উপসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়ে অবাক করেছে। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা থেকে প্রেষণে আসা অন্তত অর্ধশত কর্মকর্তাও এখনো দুদকে বহাল তবিয়তে আছেন। একাধিক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের আমলে প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের বহাল রাখা এবং এক ক্যাডার থেকে অন্য ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া দুদককে ক্রমেই দুর্বল করে তুলছে। এই ধরনের নিয়োগ এবং প্রেষণ চলতে থাকলে কমিশন যে কোনো ধরনের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, পাশাপাশি সংস্কার কমিশনের সুপারিশও কার্যকর করা সম্ভব হবে না।
দুদকের বিধি অনুযায়ী, প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ তিন বছর ওই পদে থাকতে পারেন, এরপর তাদের নিজ সংস্থায় ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু অনেক কর্মকর্তা এই বিধির বাইরে গিয়ে বছরের পর বছর দুদকে কর্মরত থাকেন এবং পদোন্নতি পান। এমনকি একাধিক কর্মকর্তা আট বছর ধরে দুদকে কাজ করছেন, যা সম্পূর্ণভাবে বিধির লঙ্ঘন।
জানতে চাইলে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আগে এই ধরনের নিয়োগ স্থগিত করা উচিত। এমন পদক্ষেপ দুদককে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে এবং সংস্কার কার্যক্রমের সফলতা ক্ষুণ্ণ করবে।’
সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর সরকারি অফিসে থাকা বিতর্কিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেষণে আসা অধিকাংশ কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। এসব কর্মকর্তা নানা কৌশলে পতিত সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আমলাদের দুর্নীতির অভিযোগের ফাইল চাপা দিয়ে রেখেছেন।
মনে করা হচ্ছে, দুদকের ক্ষমতায় থাকা কর্মকর্তাদের অনেকেই নিজেদের অপরাধ এবং দুর্নীতির স্বার্থে ফাইলের নিষ্পত্তি করেন। এমনকি অনেক তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং অনুসন্ধানকারীরা চাপের মুখে অপরাধী কর্মকর্তাদের জন্য ফাইল বন্ধ করেন।
এদিকে, নতুন কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পরও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রেষণে নিয়োগ দেওয়ার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত ৬ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাধিক প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে আবু হেনা মোর্শেদ জামান, ঈশিতা রনি, একেএম সাইফুল আলম, মোহাম্মদ ইকবাল বাহার, মো. আমিন আল পারভেজ ও মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ রয়েছেন।
দুদকের পরিচালক আব্দুল মাজেদ, মো. আব্দুল আওয়াল, উত্তম কুমার মণ্ডল, ফজলুল জাহেদ পাভেল এবং উপপরিচালক সাবরিনা নার্গিস, একেএম মাহবুবুর রহমান সহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার তিন বছরের প্রেষণ মেয়াদ শেষ হলেও তারা দীর্ঘকাল ধরে পদে বহাল আছেন।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপপরিচালক পর্যায়ে প্রেষণে নিয়োগের হার সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ হওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবে এর বিপরীত ঘটছে।
এ প্রসঙ্গে, দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (আইন ও প্রসিকিউশন) মইদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা দুদকে বছরের পর বছর কাজ করছেন, অথচ তাদের কোনো তদন্ত অভিজ্ঞতা নেই। বিধি অনুযায়ী প্রেষণের মেয়াদ তিন বছর হলেও অনেকেই সাত-আট বছর কাজ করছেন, যা সম্পূর্ণভাবে আইনের লঙ্ঘন।’
এদিকে, আমিন আল পারভেজ নামক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তথ্যে জানা যায়, তিনি মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে আসামি হিসেবে উল্লেখ হয়েছিলেন, তবে পরে তাকে দুদকের পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে দেখা যাচ্ছে, এই নিয়োগের মাধ্যমে তিনি নিজের বিরুদ্ধে থাকা মামলাটি চাপা দিতে চাইছেন।
পারভেজ এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই। আমি কোনো তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলাম, তবে তদন্ত প্রতিবেদনে আমাকে আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কিংবা প্রমাণ নেই।’
এ ধরনের নিয়োগ এবং প্রেষণ অব্যাহত থাকলে দুদকের কার্যক্রম এবং উদ্দেশ্য একেবারে অকার্যকর হয়ে পড়বে, যা দেশের দুর্নীতি দমনে বড় একটি বাধা হিসেবে দাঁড়াবে।
