হ-বাংলা নিউজ: গত ১৫-১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি, এমনটি উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনা দেশে ভুয়া নির্বাচন করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটের (ডব্লিউজিএস) এক প্লেনারি সেশনে তিনি এই মন্তব্য করেন। সেশনটি সঞ্চালনা করেন সিএনএনের উপস্থাপক বেকি অ্যান্ডারসন।
ড. ইউনূস বলেন, “জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার ওপর চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে চালানো দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার ফলে আমরা খুব খুশি। গুম, খুন, টর্চার সেল এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে ছাত্রদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে—এই সব কিছুই ডকুমেন্ট আকারে রিপোর্টে এসেছে। বিশ্ববাসী এখন জানলো তারা কী ধরনের নির্মমতা চালিয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম কাজ ছিল দেশের ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং দ্বিতীয় কাজ ছিল বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলা। নতুন সমাজ নির্মাণ এবং জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি স্থাপন ছিল আমাদের লক্ষ্য।”
ড. ইউনূস বলেন, “এ লক্ষ্যে আমরা সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছি এবং ১৫টি কমিশন গঠন করেছি। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।”
উপস্থাপক বেকি অ্যান্ডারসনের এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, “নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর আমি আবার নিজের কাজে ফিরে যাব।”
তিনি বলেন, “পুরনো বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল, তাই আমরা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই। আমরা এই পথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক সহায়তা পাচ্ছি।”
স্বৈরাচারী শাসনামলের বাংলাদেশের অর্থনীতির পতন নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “অর্থনীতি এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুরোপুরি পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যাংক থেকে চুরি হয়ে গেছে এবং প্রতিবছর ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে।”
সামাজিক ব্যবসা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “সামাজিক ব্যবসা হলো সমাজের সমস্যাগুলোর সমাধানের উপায়। এর মুনাফা অর্জন একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, বরং উদ্দেশ্য হলো সমাজের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করা।”
