Tস্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা ও একাধিক বিয়ের অভিযোগে গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নেতা তাবির হোসেন পাভেল

হ-বাংলা নিউজ:ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাবির হোসেন পাভেল স্ত্রীকে প্রতারণা করে একাধিক বিয়ে করার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর হাজারীবাগ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বুধবার সকালে পাভেলের প্রথম স্ত্রী ফারহানা ঋতু এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তার অভিযোগ, পাভেল একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি সহ একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলারও আসামি তিনি। সেই মামলার প্রধান আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, পাভেলের বিরুদ্ধে তার প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা একটি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নের বলমন্তরচর গ্রামের বাসিন্দা পাভেলকে গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। পাভেলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তিনি নবাবগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন, তবে সাজাপ্রাপ্ত মামলার তথ্য গোপন করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে নির্বাচনের আড়াই বছর পর পদ থেকে অপসারণ করে। ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

বলমন্তরচর এলাকার সাবেক ব্যাংকার আব্দুর রউফ মন্টু বলেন, “পাভেল একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বাহিনীর অত্যাচারে নবাবগঞ্জবাসী অতিষ্ঠ ছিল। পাভেল আমার বাসায় ২০২৩ ও ২৪ সালে গুলি চালিয়েছিল, কিন্তু প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। তবে তার গ্রেফতার হওয়ার পর এখন এলাকাতে শান্তি ফিরে আসবে।”

তিনি আরও বলেন, “পাভেলের বিরুদ্ধে নবাবগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে, তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। তিনি নবাবগঞ্জে বাস ডাকাতি মামলারও আসামি। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি র‌্যাবের হাতে অস্ত্রসহ আটক হয়েছিল এবং সেই মামলায় তাকে ১৭ বছর সাজা হয়েছিল।”

ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন বলেন, “২০২০ সালের ১৮ জুলাই, পাভেল ও তার বাহিনী আমার ব্যবসা দখল করতে আমার অফিসে হামলা চালায়। এ সময় আমার ভাগিনা সাজিদসহ কয়েকজন আহত হন। পরে আমাকে হত্যার জন্য কিলার ভাড়া করে। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানায় জিডি ও অভিযোগ রয়েছে।”

এলাকাবাসী জানায়, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় (২৪ ডিসেম্বর) পাভেলের নেতৃত্বে কলাকোপায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছিল এবং গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তিনি নবাবগঞ্জ শহিদ মিনার এলাকায় ২০১৩ সালের ২৬ মার্চ প্রতিপক্ষকে দিনের বেলা গুলি করেছিলেন। নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম জানান, “পাভেলের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের একটি মামলা রয়েছে এবং একাধিক জিডি রয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *