ষড়যন্ত্র বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের শক্তি হয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তারা জনবিরোধী আচরণ করছেন

হ-বাংলা নিউজ:

ষড়যন্ত্র বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেছেন, যারা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সচিবালয়ে ক্ষমতায় অধিকারী হয়েছেন, সেই মানুষগুলোই জনবিরোধী আচরণ করছেন। একটি অভ্যুত্থান এক শ্রেণির মানুষকে উচ্চ আসনে পৌঁছে দেয়, আর অন্য শ্রেণির মানুষের জন্য কোনো জায়গা রেখে যায় না।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পান্থকুঞ্জ পার্কে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

উমামা ফাতেমা বলেন, ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে অন্তর্বর্তী সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অব্যবস্থাপনার প্রকল্পগুলো নিয়ে কথা বললেও সেগুলো শোনা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হচ্ছে।

ঢাকা শহরে ন্যূনতম বাসযোগ্যতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে ঢাকাকে ডাস্টবিনে পরিণত করা হয়েছে। এখন শহরটির উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা করার সময় এসেছে, কিন্তু সরকার এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়নি। তারা শুধুমাত্র গায়েবি কথাবার্তা দিয়ে অভ্যুত্থানকে সঠিকভাবে justificy করার চেষ্টা করছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করা প্রয়োজন ছিল, কিন্তু বর্তমান সরকারও সেগুলোর বেশিরভাগ বাস্তবায়ন করছে। অনেক আপস করা হয়েছে। তাহলে গণঅভ্যুত্থানের সরকার এটি কীভাবে হবে?

গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব সমাবেশে জানিয়ে দেন, সরকার তাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা পান্থকুঞ্জ থেকে সরবেন না। তিনি বলেন, আগের সরকার জোর করে প্রকল্প শুরু করেছিল এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে ৪৫ প্রজাতির গাছ কেটেছে। জলাশয়, মাঠ ও জনপরিসরের জায়গা ছাড়েনি। যেখানে খালি জায়গা দেখেছে, সেখানেই ক্ষতি করেছে।

এছাড়া সমাবেশে সংহতি জানিয়ে কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের কর্মী সৈয়দা রত্না, শিল্পী অমল আকাশ, ব্রাত্য আমিন, ফেরদৌস আরা রুমি, দীপক সুমন, উম্মে ফারহানা, এবং বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নাঈম উল হাসান বক্তব্য দেন।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত অংশ নির্মাণের প্রকল্প বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন পরিবেশকর্মী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা। প্রায় এক মাস ধরে পান্থকুঞ্জ পার্কে অবস্থান নিয়ে তারা এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার সাংস্কৃতিক সমাবেশের অংশ হিসেবে নাটক পরিবেশন করে বটতলা নামের একটি সংগঠন, এবং প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন বেতাল, হাফ হার্টেড সুডোস ও মায়ানগর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *