হ-বাংলা নিউজ:
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, যদি নির্বাচন বিশৃঙ্খল অবস্থায় চলে যায়, তবে তা ভয়াবহ ফলাফল ডেকে আনবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, রাজনৈতিক নেতারা তার এই মতের সঙ্গে একমত হবেন।
হোসেন জিল্লুর রহমান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা উঠে এসেছে—ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া। এর পাশাপাশি, আরো দুটি বিষয় প্রবলভাবে গুরুত্ব পেয়েছে—ইনসাফ (ন্যায়বিচার) এবং মর্যাদা।
শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘ঐক্য কোন পথে’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। ঐক্য, সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে দুই দিনব্যাপী এই জাতীয় সংলাপের আয়োজন করা হয়, যার আয়োজক ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস)। সংলাপের প্রথম দিনেই তিনি এসব মন্তব্য করেন।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন সম্ভব হয়েছে এবং এটি একটি বাস্তবতা। তিনি বলেন, এই পটপরিবর্তনের মধ্যে ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার পাশাপাশি ইনসাফ ও মর্যাদার আকাঙ্ক্ষা জোরালোভাবে উঠে এসেছে। তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে, কারণ দেশটি এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখেছে। তবে, ভবিষ্যতে কী হবে, তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। তিনি আশা করেন, সব রাজনৈতিক নেতারা একমত হবেন যে, কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে নির্বাচনের দিকে ঠেলে দেওয়া উচিত হবে না।
তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অনিশ্চয়তার বিষয় সামনে এসেছে। প্রথমত, সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক জীবন আরও সংকটময় হয়ে উঠছে। দেশের অর্থনীতির চাকা ঠিকভাবে ঘুরছে না, আর এই বাস্তবতা অব্যাহত রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আমরা শুধু স্বৈরশাসনকে উৎখাত করিনি, বরং একটি নেতিবাচক রাজনৈতিক সংস্কৃতিকেও প্রত্যাখ্যান করেছি। তার মধ্যে চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং মামলাবাজির মতো বিষয়গুলো বিদ্যমান। প্রশ্ন হলো, এই সংস্কৃতিকে পুরোপুরি দূর করা সম্ভব হবে কি না। তৃতীয়ত, অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তারা কীভাবে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করবে এবং স্বৈরশাসকদের অপতৎপরতা মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে, তা একটি বড় প্রশ্ন।
হোসেন জিল্লুর রহমান আরও বলেন, তিনটি বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। প্রথমত, স্বৈরশাসন দূর করার পর একটি বড় অর্জন হচ্ছে রাজনৈতিক মেরুদণ্ড ফিরে পাওয়া। এই মেরুদণ্ডের ওপর দাঁড়িয়ে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সংস্কার নিয়ে চিন্তা করতে হবে। কিছু সংস্কার এখনই করতে হবে, আর কিছু সংস্কার সব পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা উচিত। তৃতীয়ত, রাজনৈতিক উত্তরণ প্রয়োজন, যেখানে ভোটাধিকার ও জনগণের আস্থা অর্জন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
