হ-বাংলা নিউজ: সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার কিছু অংশ বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে, দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত বিধান বাতিল হয়ে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তিত হয়েছে।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আদালত পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরোটা বাতিল করেননি। আদালত কিছু অংশ বাতিল করে বাকিগুলো ভবিষ্যতের সংসদের জন্য রেখে দিয়েছে।
২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাশ হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এছাড়া, জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয় এবং সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয়। একই সঙ্গে, রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়। এছাড়া ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আজ (মঙ্গলবার) হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে পৃথক রিটের চূড়ান্ত শুনানির পর, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে বাতিল করেন। আদালত একই সাথে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদও বাতিল ঘোষণা করেন।
রায়ের পর, রিটকারীর আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, তারা পঞ্চদশ সংশোধনী পুরোপুরি বাতিল চেয়েছিলেন। আদালত কয়েকটি ধারা বাতিল করলেও বাকি অংশ বাতিল করেননি। আদালত বলেছেন, বাকিগুলোর বৈধতাও তিনি নিশ্চিত করেননি এবং সেগুলো ভবিষ্যৎ সংসদের জন্য রেখে দিয়েছেন, যা তারা প্রয়োজন অনুযায়ী রাখতে বা বাতিল করতে পারবেন।
এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার মন্তব্য করেন, “আদালত বিষয়টি রাজনীতিবিদদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন, যা অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান সিদ্ধান্ত। এটি ঐতিহাসিক রায়।”
