পাচার করা অর্থ ফেরাতে সরকারের ১০টি যৌথ টিম গঠন

হ-বাংলা নিউজ: দেশের আলোচিত ১০টি শিল্প গ্রুপের বিদেশে পাচার করা অর্থের অনুসন্ধান এবং তা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার তিনটি সংস্থার সমন্বয়ে ১০টি যৌথ টিম গঠন করেছে। এই তিনটি সংস্থা হলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গঠিত টিম ইতোমধ্যে তাদের কাজ শুরু করেছে এবং আইনি সহায়তা প্রদান করবে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস।

সূত্র জানায়, অনুসন্ধানের আওতায় থাকা শিল্প গ্রুপগুলোর মধ্যে রয়েছে বেক্সিমকো, এস আলম, বসুন্ধরা, ওরিয়ন, নাসা, জেমকম, নাবিল, সামিট, শিকদার এবং আরামিট গ্রুপ। এ তালিকায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নামও রয়েছে।

তদন্তে জানা গেছে, এসব গ্রুপ ও ব্যক্তির নামে বেআইনিভাবে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার এবং সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মাধ্যমে তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এবং সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। অর্থ পাচারের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী, এসব গ্রুপ ও ব্যক্তির ব্যাপারে বিস্তারিত অনুসন্ধান হবে। তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের নামও তদন্তের আওতায় আসবে।

এদিকে, এসব গ্রুপের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইতোমধ্যে বিএফআইইউ (বাংকল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট) ফ্রিজ করে দিয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বেআইনি ব্যাংক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনদেরও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রেজওয়ান সিদ্দিক ববি, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে ফাহিম, শেখ হেলাল, শেখ তন্ময়, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য।

অনুসন্ধানের আওতায় থাকা অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক দখল, ঋণ জালিয়াতি এবং অর্থ পাচারের ঘটনা। এসব ব্যক্তি ও গ্রুপের সম্পদের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ, ঋণের ব্যবহার, অর্থের গতিপথ এবং তাদের ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা হবে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং কিছু তথ্যও ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *