হ-বাংলা নিউজ:
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে বর্তমানে চিকিত্সাধীন জুলাই আন্দোলনে আহতদের মধ্যে ৭৪.৫ শতাংশের মানসিক অবস্থার মধ্যে বিষণ্নতার উপসর্গ রয়েছে, যা উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিত্সকরা। বুধবার অনুষ্ঠিত ‘দৃষ্টি ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক’ এক কর্মশালায় এই তথ্য তুলে ধরেন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোাগী অধ্যাপক ডা. মুনতাসীর মারুফ।
তিনি জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত হয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিত্সাধীন ৫৫ জন রোগীর মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য সম্প্রতি একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়।
জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৭৪.৫ শতাংশ রোগীর মধ্যে বিষণ্নতার উপসর্গ রয়েছে। এর মধ্যে ২৭.৩ শতাংশের বিষণ্নতা অত্যন্ত তীব্র। এছাড়াও, প্রায় অর্ধেক রোগীর মধ্যে উদ্বেগ (৫৪.৫%) এবং মানসিক চাপ (৫৮.২%) রয়েছে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে আহতদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে পুরুষদের জন্য ১০ শয্যার একটি আলাদা ওয়ার্ড এবং নারীদের জন্য ১০ শয্যার আরেকটি আলাদা ওয়ার্ড রাখা হয়েছে। এছাড়া, সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন অফিস সময়ে আহতদের বিনামূল্যে বিশেষ কাউন্সেলিং এবং সাইকোথেরাপি সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের আহমেদ, প্রধান অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এইচ ই এম রেজওয়ানুর রহমান সোহেল এর সঞ্চালনায় কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ।
কর্মশালায় চোখে আঘাতপ্রাপ্ত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার চিকিত্সা এবং বর্তমান অবস্থা নিয়ে উপস্থাপনা করেন হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোাগী অধ্যাপক (সাইকিয়াট্রিস্ট) ডা. মুনতাসীর মারুফ।
এছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা করেন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডা. তৈয়বুর রহমান, জাতীয় নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের চিকিত্সক ডা. মাহফুজুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক। কর্মশালার শেষে সিএমএইচ, ইস্পাহানি ইসলামিয়া, এনআইওএইচ, বিএসএমএমইউর চক্ষু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এক প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
