হ-বাংলা নিউজ:
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি এখনও দায়িত্বভার গ্রহণ করেননি, ইতোমধ্যেই তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। তার সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রকাশ হতে শুরু করেছে, এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি যাদের নাম ঘোষণা করছেন, তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত চমকপ্রদ নাম উঠে আসছে।
ট্রাম্পের প্রশাসনে নতুন মুখ
এবার ট্রাম্পের প্রশাসনে নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক, যিনি ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ট্রাম্পের নতুন ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট ইফিশিয়েন্সি’ (সরকারি কার্যক্রম দক্ষতা বিভাগ) এ যুক্ত হচ্ছেন ইলন মাস্ক, তার সঙ্গে যোগ দেবেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বিবেক রামাস্বামীও।
এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, “এই দুই চমৎকার আমেরিকান সরকারের আমলাতন্ত্রকে খোলস থেকে বের করে আনবেন। তারা অতিরিক্ত বিধিবিধান কমাতে, অযথা ব্যয় হ্রাস করতে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তরগুলোর পুনর্গঠন করতে সহায়তা করবেন।”
বিবেক রামাস্বামীর রাজনীতি ও ব্যবসায়িক অবস্থান
বিবেক রামাস্বামী, যিনি ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন, প্রাথমিক বাছাইয়ে পরাজিত হন। এরপর তিনি ট্রাম্পের সমর্থনে নিজ অবস্থান থেকে সরে দাঁড়িয়ে ট্রাম্পের পছন্দের তালিকায় চলে আসেন। তবে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট ইফিশিয়েন্সি’র কাজ কী হবে এবং এতে মাস্ক ও রামাস্বামীর স্বার্থের সংঘাত ঘটবে কি না, সে বিষয়ে নানা আলোচনা চলছে। ট্রাম্প বলেছেন, তারা সরকারের বাইরে থেকে উপদেশ ও দিকনির্দেশনা দেবেন।
নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি
ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ফক্স নিউজের উপস্থাপক পিট হেগসেথের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “পিট একজন শক্তিশালী ও বুদ্ধিমান মানুষ। তিনি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির একজন কঠোর সমর্থক। তার নেতৃত্বে মার্কিন সামরিক বাহিনী আরও শক্তিশালী হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র কখনোই পিছিয়ে পড়বে না।”
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (হোমল্যান্ড সিকিউরিটি) হিসেবে সাউথ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েমের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২২ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে গভর্নর নির্বাচিত হওয়া নোয়েম করোনা মহামারির সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার বিরোধিতা করে জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনায় আসেন। যদিও এই নিয়োগ সম্পর্কিত কোনো মন্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি, তবে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের দায়িত্বে থাকা সাউথ ডাকোটা গভর্নরের প্রতি ট্রাম্পের আস্থা স্পষ্ট।
ইসরাইলে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত: মাইক হাকাবি
এছাড়া, ট্রাম্প ইসরাইলে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মাইক হাকাবির নাম ঘোষণা করেছেন। হাকাবি, যিনি আরকানসাসের সাবেক গভর্নর এবং একজন রক্ষণশীল রাজনীতিক, ইসরাইলের পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের প্রবল সমর্থক।
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, “মাইক হাকাবি ইসরাইলের মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং আগ্রহ দেখান। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করবেন।” হাকাবির এই দৃঢ় ইসরাইলপন্থি অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির ওপর বড় ধরনের রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রাম্পের প্রশাসনে আসন্ন পরিবর্তন
এই নতুন নিয়োগগুলো মার্কিন প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পথচলার দিকে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্বব্যাপী এসব পরিবর্তন মার্কিন নীতিতে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসবে।
আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, এবং তখনই তার প্রশাসনের নতুন পরিবর্তনগুলো বাস্তবে পরিণত হবে।
