সংখ্যালঘুদের জন্য ৮ দফা দাবি জানাল ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’

হ-বাংলা নিউজ: সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন এবং সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’।

শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগণের ৪০টি সংগঠনের সমন্বয়ে আয়োজিত এক গণসমাবেশে এই দাবি উত্থাপিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানকে শক্তিশালী করতে হলে আর কোনো শোষণ ও বঞ্চনা সহ্য করা হবে না। তারা জানান, অতীতে অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে তারা আর তা চান না। এই আট দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকার অঙ্গীকার করেন।

এছাড়া বক্তারা সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে একত্রিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। আট দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, রাজনৈতিক শক্তি ও দেশবাসীর প্রতি আবেদন জানানো হয়। বক্তারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সাথে জড়িত অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানান।

সমাবেশ থেকে সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত ও চিন্ময় ব্রহ্মচারীসহ সকল সংখ্যালঘু নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। এ সময় ইসকন নিষিদ্ধের দাবিরও প্রতিবাদ করা হয়।

গণসমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও আট দফা দাবি এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ পুনর্গঠনের জন্য ছয় দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব ভাবা যায় না। আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র গড়তে চাই, যেখানে গণতন্ত্র, সমতা ও সমৃদ্ধি থাকবে।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, ইসকনের সাধারণ সম্পাদক শ্রী চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, দীপঙ্কর শীল, জয়ন্ত কুমার দেব, পলাশ কান্তি দে, রামানন্দ দাস, সুমন কুমার রায়, চাঁদ মোহন রবিদাস, তপন মজুমদার, সুস্মিতা কর ও উৎপল বিশ্বাসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, “হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আদিবাসী—এ দেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়ে আন্দোলন করেছে। কিন্তু আমরা এখনও বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার। এ কারণেই এই আট দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।”

চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “ইসকনের কর্মকাণ্ড বিশ্বজুড়ে রয়েছে। ইসকনকে নিষিদ্ধ করলে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আসবে।”

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, “আমাদের জন্য বিদেশী সাহায্য প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সমস্যা আমরা নিজেরাই সমাধান করব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *