হ-বাংলা নিউজ: ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অতীত, একাত্তরের গণহত্যা ও বঙ্গবন্ধুকে
অস্বীকার করায় ড. ইউনুসের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং তাকে বহুরূপী রাজাকার ও বাংলাদেশের শত্রু আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নেতৃবৃন্দ। যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড. নুরুন নবীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রানা হাসান মাহমুদের সঞ্চালনায় ৬ই অক্টোবর ২০২৪ রবিবার অনলাইন জুমে আয়োজিত আলোচনা সভায় এই প্রতিবাদ জানান নেতৃবৃন্দ।
গত ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ভয়েস অফ আমেরিকার এক সাক্ষাৎকারে ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পোরানো, ১৫ই আগস্টের সরকারি ছুটি বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনুস বলেছেন – প্রথমে স্বীকার করতে হবে যে, ছাত্ররা বলেছে, আমরা রিসেট বাটন পুষ করেছি। এভরিথিং ইজ গন। অতীত নিশ্চিতভাবে চলে গেছে। এখন নতুন ভঙ্গিতে আমরা গড়ে তুলবো।
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী তার সূচনা বক্তব্যে বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি ক্যু করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারকে সরানো হয়েছে। বাংলাদেশে যে সকল ব্যক্তি ও দল এবং আন্তর্জাতিক ভাবে যে সকল দেশ ১৯৭১ সালের পরাজয়কে মেনে নিতে পারেনি, তারাই সরকার হটানোর এই ষড়যন্ত্রে সাথে লিপ্ত। তারা চান বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সকল চিহ্ন মুছে ফেলতে এবং তারই ধারাবাহিকতায় অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ড. ইউনুস বাংলাদেশের অতীতকে অস্বীকার করে যে কথা বলেছেন আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
জুমে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও কানাডা থেকে সংযুক্ত নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনুস বাংলাদেশের অতীতকে অস্বীকার করে তিনি আমাদের গৌরবের ইতিহাসকে অস্বীকার করলেন। তার কথার মাধ্যমে তিনি ১৯৭১ একাত্তর সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ নারীর সর্বোচ্চ ত্যাগকে অস্বীকার করলেন এবং তাদেরকে অসম্মান করলেন। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জানা দরকার ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র থাকাকালীন সময় বাংলাদেশের স্বপক্ষে ড. ইউনুসের কোন ভূমিকা ছিলনা। তিনি যে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেন, সেই মুখোশ ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে এবং অচিরেই বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারবে যে তিনি পাকিস্তানপন্থি। ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনুসের বক্তব্যকে আমরা ঘৃণাভরে প্রথ্যাখান করছি এবং এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
জুমে সংযুক্ত নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, কেউ রিসেট বাটন পুষ করলেই ইতিহাস মুছে যায়না, ড. ইউনুসের মতো একজন শিক্ষিত মানুষ এই কথা বুঝতে পারছেন না, তবে উনার জানা উচিৎ ইতিহাস কাউকে ক্ষমাও করেন না। এই ড. ইউনুস, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আজ পর্যন্ত একটি কথাও বলেননি। ৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ধিক্ষার দেওয়া দূরের কথা, তিনি পাকিস্তানের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। বাংলাদেশের সংবাদ মাদ্যমকে সেন্সর করা হয়েছে, ৫ই আগস্টের পর থেকে সারা দেশে যে গুম খুন করা হচ্ছে, বিশেষ করে বেছে বেছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোকদের যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সংখ্যা লঘুদের উপর যে আক্রমণ করা হচ্ছে, তাদের ঘর বাড়ি মন্দির জ্বালানো হচ্ছে, মূর্তি ভাঙ্গা হচ্ছে তার কোন সংবাদেই সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে এই ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশের জনগণ এতো বোকা নয়, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশে যে অন্যায় অবিচার হচ্ছে তা সারা বিশ্বকে জানান দিচ্ছে এবং ড. ইউনুসের আসল রূপ উন্মোচিত করছে। উনার ই সকল ঘৃণিত কৃতকর্মের জন্য একদিন তিনি ইতিহাসের আস্তাকুরে নিক্ষিপ্ত হবেন।
সভায় সংযুক্ত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা যথাক্রমে ড. জামিল তালুকদার (উইসকন্সিন) ও ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন (আলাবামা), সহসভাপতি যথক্রমে রাফায়েত চৌধুরী (নিউইয়র্ক), ফাহিম রেজা নূর (ফ্লোরিডা), সফেদা বসু বিন্ধু (বোস্টন), আহাদ আহমেদ (মিশিগান), নজরুল আলম (ক্যালিফোর্নিয়া) ও জাকারিয়া চৌধুরী (নিউইয়র্ক), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়া (নিউইয়র্ক), সাংগঠনিক সম্পাদক দস্তগীর জাহাঙ্গীর (ওয়াশিংটন), বিশেষ প্রকল্প সম্পাদক শাখাওয়াত আলী (নিউইয়র্ক), কানাডা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আমিন মিয়াঁ, মুলধারার রাজনীতিবিদ ড. দিলিপ নাথ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, এক্টিভিস্ট ও অধ্যাপিকা ড. নিরু নাহার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিনহাজ সাম্মু, আবৃত্তিকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোপন সাহা, বোস্টন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল বড়ুয়া, ক্যালিফোর্নিয়া মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহানা পারভিন, প্রমুখ।
