হ-বাংলা নিউজ: ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ চাপ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত শনিবার গাজা থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের পর যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নেতানিয়াহুকে তীব্র সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাজ্যও সোমবার ঘোষণা করেছে যে তারা ইসরায়েলে কয়েক ধরনের অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করছে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের আশঙ্কার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট লন্ডনের সিদ্ধান্তে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশের অভ্যন্তরে তুমুল বিক্ষোভের মুখে ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ছয় জিম্মিকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থতার জন্য ‘ক্ষমা’ প্রার্থনা করেছেন।
শনিবার দক্ষিণ গাজার রাফা এলাকা থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করে ইসরায়েলি সেনারা। তাদের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক ছিলেন। মরদেহ উদ্ধারের পর ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার, প্রধান ট্রেড ইউনিয়ন হিস্ট্রাড্রট দেশজুড়ে একটি বড় ধর্মঘটের ডাক দেয়, যা তেল আবিবসহ বেশ কয়েকটি শহরকে কার্যত অচল করে দেয়। এর আগে রোববার, নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য তাড়াতাড়ি চুক্তির দাবি তোলেন।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস সতর্ক করে বলেছে যে, যদি যুদ্ধবিরতি না হয়, তাহলে আরও জিম্মিকে মৃত অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়।
গত বছরের নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির সময়ে বেশ কয়েকজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় জীবিত ও মৃত অবস্থায় আরও কয়েকজন জিম্মিকে উদ্ধার করে ইসরায়েলি সেনারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজায় এখনও হামাসের হাতে ৯৭ জন জিম্মি রয়েছে, এবং মোট ৩৩ জন জিম্মির মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের বিশ্বাস, এখনও যাদের মুক্তি মেলেনি, তাদের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সোমবার নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দেন যে, জিম্মি হত্যার জন্য হামাসকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তিনি গাজা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কোনো ছাড় দেওয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন। নেতানিয়াহু বলেন, গাজা-মিসর সীমান্তে ইসরায়েল গুরুত্বপূর্ণ ফেলাডেলফি করিডরের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে, যা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নেতানিয়াহুর সমালোচকরা দাবি করছেন, নেতানিয়াহু ক্ষমতা ধরে রাখতে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছেন।
