উকিল সাত্তার মার্কা বিরোধী দল করে নির্বাচন করতে চায় আওয়ামী লীগ

গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার উকিল সাত্তার মার্কা বিরোধী দল দাঁড় করিয়ে আগামী নির্বাচন করতে চায়। এর মাধ্যমে বিদেশিদের দেখাতে চায়, তারা একটা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করেছে। এ জন্য আগামী নির্বাচনে আরও কিছু উকিল সাত্তার জোগাড় করতে চায়। তাঁদের অবশ্যই জিতিয়ে আনা হবে। এই বলে তাঁদের আশ্বস্ত করতে চান।

আজ শুক্রবার বিকেলে গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার প্রথম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগরের জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি আওয়ামী লীগ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে বাগিয়ে নিয়ে এসেছে। উকিল সাত্তারকে তো বলেছেন, যেভাবে হোক পাস করিয়ে আনবে। ভয় ছিল যদি ফেল মেরে যায়। তাই একজন প্রার্থী ছিলেন তাঁকে গায়েব করে দেওয়া হলো। আর নির্বাচন কমিশন বলল, উনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে আছেন। এতে বোঝা গেল, কত বড় মিথ্যাবাদী তারা (নির্বাচন কমিশন)। প্রার্থীর নিরাপত্তা দিতে পারে না, আবার তারা নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন করবে?

স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে জিতিয়ে আনতে নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগকে সাহায্য করেছে উল্লেখ করেছেন জোনায়েদ সাকি। ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গাইবান্ধা উপনির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছিল। কিন্তু খরচ বাড়বে বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি।আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশন নিয়ে অনেক নাটক করেছে মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন মুখে নিরপেক্ষতার কথা বললেও বাস্তবতা ভিন্ন। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিচ্ছে না। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আছে বলে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না। অথচ সম্প্রতি প্রয়াত নাজমুল হুদার দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, এই কমিশন কতটা নিরপেক্ষ?দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য দফায় দফায় বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ ভালো নেই। এখন খারাপ চালের কেজিও সর্বনিম্ন ৬০ টাকা। তিন বেলা খেতে পারছেন না। সঞ্চয় ভেঙে চলতে হচ্ছে। কৃচ্ছ্রসাধন প্রয়োগ করা হয় শুধু গরিব মানুষের ওপর।সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক হাসান মারুফ বলেন, এক যুগ ধরে মানুষের ভোটাধিকার লুণ্ঠিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের নামে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য কায়েম করেছে। টাকা পাচারের কারণে এখন ব্যাংকগুলোতে এলসি খোলা যাচ্ছে না। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ যত এগিয়ে চলছে, তত ব্যয় বাড়ছে। কিন্তু দুর্ভোগ কমছে না। আবার সিটি করপোরেশনের মেয়র গৃহকরের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে মানুষের ওপর।সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শুরুর আগে চট্টগ্রাম জেলার কমিটি ঘোষণা করেন জোনায়েদ সাকি। হাসান মারুফকে সমন্বয়কারী এবং ফরহাদ জামানকে নির্বাহী সমন্বয়কারী করে ২৯ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। আলোচনা সভা শেষে শোভাযাত্রা বের হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পীরা গান, আবৃত্তি ও মূকাভিনয় করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *