ফয়সাল হত্যা: সাহায্যার্থে খোলা হলো গোফাণ্ডমি পেইজ

পুলিশের গুলিতে ম্যাসাচুসেটসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফয়সালের (২০) মৃত্যুতে তার অসহায় পরিবারের সাহায্যার্থে ও তার শেষকৃত্যের জন্য গোফাণ্ডমি পেইজ খোলা হয়েছে।

সেখানে বাসিন্দারা অর্থ সাহায্য করতে পারবেন। পেইজের লিংক: https://gofund.me/7b55ec94

এর আগে গতকাল ক্যামব্রিজ সিটি হলের সামনে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিসহ স্থানীয় জনগণ।

‘বাংলাদেশ লাইভস ম্যাটারস’সহ বিভিন্ন স্লোগান ও প্লেকার্ড ব্যবহার করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। প্রায় ২০০ জন বাঙ্গালিসহ অন্যান্য কমিউনিটির বাসিন্দারা এই প্রতিবাদে অংশ নেন।

আন্দোলনকারীদের দাবি, ফয়সাল পুলিশি সহিংসতার শিকার হয়েছেন। পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ফয়সালের বুকে গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে। ফয়সালকে গুলি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলে পুলিশ যে দাবি করছেন, তার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা।

আগামী সোমবার আবারও সিটি হলের সামনে জড়ো হয়ে ফয়সাল হত্যার প্রতিবাদ করবেন বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন।

স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে কেমব্রিজের চেস্টনাট স্ট্রিটে এই ঘটনা ঘটে।সাঈদ ফয়সাল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা এলাকায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রেই ফয়সালের জন্ম হয়েছে।

এ ঘটনার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে বসবাসকারী তার চাচা সেলিম জাহাঙ্গীর জানান, ফয়সাল এখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজও করতেন। তিনি শান্তশিষ্ট, ভালো ছেলে। তাকে পুলিশ কেন গুলি করল তা স্পষ্ট নয়।

একজন প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগ উল্লেখ করে জানা যায়, বুধবার বেলা সোয়া ১টার দিকে ওই বাসিন্দা ৯১১–এ ফোনে করে জানান এক ব্যক্তি একটি অ্যাপার্টমেন্টের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েছেন। তার হাতে চাপাতির মতো ধারাল অস্ত্র রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এরপর পুলিশ গিয়ে সিডনি স্ট্রিটের একটি ভবনের পেছনে ওই ব্যক্তিকে দেখতে পায়। পরে জানা গেছে তিনি ২০ বছর বয়সী সাঈদ ফয়সাল।

পুলিশ বলছে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর ফয়সাল অস্ত্র হাতে সেখান থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে দেখা গেছে তার একটি এক ফুট লম্বা একটি ছোরা ছিল।

মিডলসেক্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস বলেছে, ফয়সাল যখন অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাচ্ছিল তখন তাকে আটকানোর জন্য বেশ কয়েকবার বাধা দেওয়া হলেও তাকে নিবৃত্ত করা যায়নি। এক পর্যায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবর্ষণ করেন এবং তাতে ফয়সাল বিদ্ধ হন। ঘটনার পর ফয়সালকে উদ্ধার করে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এদিকে ফয়সালকে গুলিবর্ষণকারী পুলিশ সদস্যকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে সিবিএস নিউজ জানিয়েছে। তবে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষী পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ফয়সালের চাচা সেলিম জাহাঙ্গীর।

ঘটনা সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্য নাকচ করে সেলিম জাহাঙ্গীর আরো বলেন, ফয়সালের হাতে ছুরি থাকার কোনো প্রমাণ এখনো পর্যন্ত পুলিশ দেখাতে পারেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *