আন্দোলন সংগ্রাম ঠেকাতে পুলিশ বডি-ক্যামেরা ব্যবহারসহ অস্ত্র ব্যবহারের বিরোধিতা, ডিসি সম্মেলনে ৩৫৩টি প্রস্তাব উপস্থাপন

হ-বাংলা নিউজ: ঢাকা: জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে পুলিশ সদস্যদের আন্দোলন প্রতিরোধের দায়িত্ব পালনের সময় বডি-ক্যামেরা ব্যবহার করার সুপারিশ করেছে ডিসিরা। এছাড়া, তারা পুলিশ সদস্যদের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের বিরোধিতা করে, এমনকি ছররা গুলি ব্যবহার না করার প্রস্তাব দিয়েছে। এসব প্রস্তাবসহ সাড়ে তিন শতাধিক প্রস্তাব ডিসি সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।

আজ, ১৬ ফেব্রুয়ারি, সকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। গত বছরের মতো এবারও সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন। সম্মেলনটি আগামী মঙ্গলবার শেষ হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ শনিবার বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন এবং এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত বছর জেলা প্রশাসক সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলির বাস্তবায়ন হার কিছুটা কমেছে। পূর্ববর্তী সরকারের অনেক উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বর্তমান সরকার বাস্তবায়নে আগ্রহী নয়, আর তাই কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি আরও জানান, গত বছরের ডিসি সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তের মাত্র ৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

এবারের সম্মেলনে ডিসিরা প্রস্তাব করেছেন যে, আন্দোলন প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যরা বডি-ক্যামেরা ব্যবহার করবে এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া, ডিসিরা একটি বিশেষায়িত ফোর্স গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন, যাতে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, ডিসিরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য নতুন বিধিমালা প্রণয়নের প্রস্তাবও দিয়েছেন। এবারের সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ১২৫০টি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে ৩৫৪টি প্রস্তাব বিভিন্ন অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গণি।

এছাড়া, গত বছর ডিসি সম্মেলনে ৩৮১টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ১৭৭টি বাস্তবায়িত হয়েছে, এবং ২০৪টি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এবারের সম্মেলনে ৩০টি কার্য-অধিবেশন এবং চারটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ অধিবেশনগুলোতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মুক্ত আলোচনা, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা, এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ড. শেখ আব্দুর রশীদ আরও বলেন, এবারের সম্মেলনটি জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হবে, যেখানে ডিসিরা আহত ও নিহতদের তালিকা প্রস্তুত করেছেন এবং শহিদদের দাফনে অংশগ্রহণ করে তাদের পরিবারের পাশে সরকারি সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *