হ-বাংলা নিউজ: গত বছর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ নবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছিল। খেলাপি ঋণ বা কিস্তির অর্থ এককালীন বা কম হারে পরিশোধ করে দীর্ঘ সময়ের জন্য নবায়নের সুযোগ পাওয়া যায়। এই সুবিধার আওতায় ২০২৩ সালে ৯১,২২১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। তবে, নবায়নের পর আবার ৫৪,৬০ কোটি টাকার ঋণ নতুন করে খেলাপি হয়ে পড়েছে, যা কিস্তি পরিশোধ না করার কারণে ঘটেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, যা প্রতিবছর দেশের অর্থনীতি ও আর্থিক খাতের পরিস্থিতি তুলে ধরে। প্রতিবেদনটিতে ব্যাংক খাতের দুর্বলতাও স্পষ্ট হয়েছে, বিশেষ করে গত বছর আইএমএফ-এর শর্ত অনুযায়ী তথ্যগুলো সংরক্ষিত করা হয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ নবায়নের জন্য বেশকিছু ছাড় প্রদান করছে। ২০২০ থেকে ২০২২ সালেও করোনার কারণে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে, ২০১৯ সালে ৫২,৩৭০ কোটি, ২০২১ সালে ২৬,৮১০ কোটি এবং ২০২২ সালে ৬৩,৭২০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন হয়। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে ৯১,২২১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, খেলাপি ঋণ নবায়নের পরের বছরের পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে নবায়ন করা ঋণের একটি বড় অংশ আবার খেলাপি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, ২০২৩ সালে নবায়ন হওয়া ঋণের মধ্যে ১৮.৭% আবার খেলাপি হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক ঋণগ্রহীতা নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করলেও গড়ে ১৯-২২% গ্রাহক ঋণের শর্ত অনুযায়ী কিস্তি পরিশোধ করছেন না।
এছাড়া, ব্যাংক খাতে স্বল্পমেয়াদি তারল্যের ঘাটতির কারণে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তবে আমানত বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি সামলাতে সক্ষম হয়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং বিশেষ ছাড়ের ফলে ঋণ আদায় কমেছে, ফলে ব্যাংকগুলোর আয় কমেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, খেলাপি ঋণের বেশিরভাগই শীর্ষ ৫ ব্যাংকের হাতে রয়েছে, যেখানে ৪৭.৬০% খেলাপি ঋণ রয়েছে।
