আইনি জটিলতায় নতুন মোড়
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড, নিবন্ধন ও পরিচালনা–সংক্রান্ত গুরুতর অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আরজেএসসি–কে (Registrar of Joint Stock Companies) একটি বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পত্র পাঠিয়েছে। ২ জুলাই ২০২৫ তারিখে জারি করা ইউজিসির একাডেমিক শাখার এই পত্রে ৭ দিনের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়।
একাধিক বোর্ড, পরস্পরবিরোধী কাগজপত্র
ইউজিসি তাদের চিঠিতে জানায়, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধন ও বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতা ও পরস্পরবিরোধী দলিল পাওয়া গেছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়—
- একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে দুই ধরনের নেম ক্লিয়ারেন্স রয়েছে (“BRITANNIA UNIVERSITY” ও “britannia university”)
- ২০১১ সালের IV-102/11 ও IV-113/11 নথিতে ১২ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি RJSC–তে লিপিবদ্ধ
- পরবর্তীকালে সৈয়দ এহসানুল হক কর্তৃক ৩ সদস্য পদত্যাগ দেখিয়ে নতুন একটি নির্বাহী কমিটি জমা দেওয়া হয়
- আবার একটি পৃথক ১৯ সদস্যবিশিষ্ট অন্য সোসাইটি দলিল (IV-92/11) RJSC–তে জমা রয়েছে, যা বর্তমানে অনুসন্ধানাধীন
ইউজিসি বলছে, এসব নথির মধ্যে কোনটি বৈধ এবং কে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রকৃত ট্রাস্টি/বোর্ড–এ বিষয়ে সুস্পষ্ট আইনি অবস্থান প্রয়োজন।
আরজেএসসি–কে ৭ দফা তথ্য চেয়েছে ইউজিসি
চিঠিতে আরজেএসসি–কে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো—
- এ পর্যন্ত RJSC–তে লিপিবদ্ধ সব নির্বাহী কমিটির (Executive Committee) তালিকা ও বৈধতা–সংক্রান্ত নথি
- RJSC–র অনলাইন কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে–পরে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিবরণ
- একই নামে দুই রকম নেম ক্লিয়ারেন্সের ব্যাখ্যা
- প্রথম ১২ সদস্যের কমিটি কীভাবে নিবন্ধিত হলো এবং পরবর্তী কমিটি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বোর্ড রেজুলেশনের কপি সরবরাহ করা হয়েছিল কি না
- ১৯ সদস্যের দলিল RJSC কেন গ্রহণ করল এবং কোন আইন অনুযায়ী—তার ব্যাখ্যা
- বোর্ড রেজুলেশন ছাড়া কোনো নির্বাহী কমিটি RJSC–তে দাখিল হয়েছে কি না
- সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৮৬০ ও ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বৈধ মালিকানা, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ও নির্বাহী কমিটি–সংক্রান্ত সনদপ্রাপ্ত কপি
এছাড়া ইউজিসি তাদের তদারকি কমিটির কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে দ্রুততম সময়ে এসব নথি সরবরাহের অনুরোধ জানায়।
তদারকি কমিটিতে রয়েছেন দেশের দুই উপাচার্য
ইউজিসির গঠিত তদন্ত/তদারকি কমিটির প্রধান হলেন—
- প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপাচার্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
এবং সদস্য— - প্রফেসর মুহাম্মদ ইসমাইল, উপাচার্য, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ওপর বাড়ছে নজরদারি
সম্প্রতি ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতার সংকট, ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তনে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন, তদন্ত ও নথি যাচাই শুরু করে।
একই প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক বোর্ড ও সোসাইটি নিবন্ধন, ভিন্ন ভিন্ন দলিল এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অভিযোগ–বিরোধী বক্তব্য—সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ নেতৃত্ব ও মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
