বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে ১১ দফা প্রস্তাব বাস্তবায়নের তাগিদ

হ-বাংলা নিউজ:

বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে রূপান্তরের জন্য ১১টি প্রস্তাব বা রোডম্যাপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে ‘অ্যা পেনিনসুলা ডেভেলপমেন্ট ডায়ালগ ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এই বিষয়ে কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘জুলাই ৩৬ ফোরাম’।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শক্তি কেন্দ্র এবং বিশ্বে ‘নেক্সট ১১ অর্থনৈতিক শক্তি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ নির্ধারণে ১১টি মৌলিক বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ গত ৫৩ বছরে নানা সংকট মোকাবিলা করেছে, তবে সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপি অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।

জুলাই ৩৬ ফোরামের আহ্বায়ক মোহাম্মদ এ নাজীর শাহীন বলেন, এখনই সঠিক রোডম্যাপ কার্যকর করার সময়, অন্যথায় সম্ভাবনাগুলো হারিয়ে যেতে পারে।

বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, রাষ্ট্র পরিচালনা, বিনিয়োগ প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে বলেন, ২০০৮ সালে বিশ্বখ্যাত গোল্ডম্যান সাচের প্রজেকশন অনুযায়ী বাংলাদেশ ১১তম অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকার সম্ভাবনা ছিল। তবে বর্তমানে দেশটি অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।

প্রস্তাবিত রোডম্যাপ/১১ দফা প্রস্তাব:

১. অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক গতিশীলতা আনয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বিশ্লেষক এবং থিঙ্কট্যাঙ্কগুলোর মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ,
২. ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়নে রেল, উচ্চগতির ট্রেন, গভীর সমুদ্রবন্দর এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হাব হিসেবে গড়ে তোলা,
৩. কৌশলগত প্রতিরক্ষায় ব্লু ইকোনমি ও রণতরী সংযোজনের মাধ্যমে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি,
৪. বহুজাতিক সম্পর্কে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক এবং চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সমন্বয়,
৫. প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করে সুন্দরবন ডকট্রিন ও অন্যান্য পরিবেশগত সম্পদ রক্ষা,
৬. আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে জোরালো ভূমিকা নিয়ে ইউএন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ অর্জন,
৭. কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড ব্যবহার করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি,
৮. ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়নে ২০৩৮ সালে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ আয়োজনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্যোগ গ্রহণ,
৯. প্রশাসনিক সংস্কারে দুর্নীতি দমন ও জবাবদিহির মাধ্যমে প্রশাসনকে জনমুখী করা,
১০. প্রধান উপদেষ্টা নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রণীত থ্রি-জিরো: দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণসহ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি,
১১. বিশ্বমঞ্চে অবস্থান তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট ডেল্টা নেশন হিসেবে ব্র্যান্ডিং।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সুব্রত ঘোষ সুমন, নাওয়দি হোসাইন, মারুফী হাসান, কনক ইসলাম, এসএম লিমন এবং আরিয়ান নাজীর প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *