হ-বাংলা নিউজ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অনার্স ভর্তিতে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মামলার বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও রেজিস্ট্রারকে বিবাদী করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আশরাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার।
গত ৫ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের ই-মেইলে এ বিষয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। নোটিশ পাওয়ার পর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় মানবাধিকার একটি প্রতিষ্ঠান, একজন অভিভাবক, একজন সাধারণ নাগরিক ও সুপ্রিম কোর্টের সাতজন আইনজীবীর পক্ষে রিটটি দায়ের করা হয়।
রিটকারীরা হলেন- মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ল অ্যান্ড ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, একজন ছাত্রের অভিভাবক হোসেন আলী, ব্যবসায়ী মাহফুজুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার, ব্যারিস্টার মাহদী জামান (বনি), অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, অ্যাডভোকেট নাঈম সরদার, অ্যাডভোকেট শাহেদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট খায়রুল বাশার এবং অ্যাডভোকেট লোকমান হাকিম।
নোটিশে বলা হয়েছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ক) মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, (খ) ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ১ শতাংশ, এবং (গ) শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা বহাল রেখে বাকি সব কোটা বাতিল করতে হবে।
নোটিশে আরো বলা হয়েছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি গৌরবময় প্রতিষ্ঠান, যা প্রতিষ্ঠার পর থেকে গণতান্ত্রিক ও অধিকার রক্ষার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে এবং শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের পতন আন্দোলনে।
নোটিশে দাবি করা হয়েছিল, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে হতে হবে। অন্য কোনো মানদণ্ডে ভর্তি প্রক্রিয়া বৈষম্যমূলক, স্বেচ্ছাচারী ও অযৌক্তিক এবং রাষ্ট্রীয় উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
এছাড়া, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি কোটা বাতিল হলেও কর্তৃপক্ষ পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা বহাল রেখেছে, যা সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বৈষম্যমূলক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের ছেলে-মেয়েরা সেই মানদণ্ড পূরণ না করায়, তাদের জন্য কোটা সংরক্ষণ করা অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক। খেলোয়াড়দের কোটা সংবিধানে সংজ্ঞায়িত পশ্চাৎপদ বিভাগের অধীনে পড়েনা, তাই এ কোটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থি।
রিটকারীরা আরো দাবি করেন যে, খেলোয়াড় কোটা সংক্রান্ত ভর্তি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির সুযোগ রয়েছে।
